Categories
প্রবাস সাক্ষাতকার

“যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া একটা বড় চ্যালেঞ্জ”

বাংলাদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের লক্ষ্য থাকে জার্মানিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য বেশিরভাগ প্রবাসী চাকরি কিংবা ব্যবসা, এর দুটোর একটা বেছে নেন। তবে চাকরির পাশাপাশি নিজের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর উদাহরণ খুব বেশি নয়। জিয়াদ ইকবাল তাদের একজন।

পেশায় তিনি একজন তথ্য প্রযুক্তিবিদ। কিন্তু নেশা তার ব্যবসা।  তাই তিনি লক্ষ্যস্থির করেছেন, জার্মানির তথ্য প্রযুক্তির বাজারে তিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত করে ছাড়বেন।

বিগত ২০০৭ সালে জার্মানিতে আসেন তিনি বন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ছাত্র হিসেবে। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ছোট আইটি কোম্পানিতে পার্ট টাইম চাকরি করতেন তিনি। একই সঙ্গে চলে জার্মান শেখা। মাস্টার্স শেষ করার পরের কয়েক বছর ফ্রাংকফুর্ট এবং কোলনের একাধিক কোম্পানিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয় জিয়াদ ইকবালের। এভাবেই জার্মানিতে তার প্রায় দশ বছর কেটে যায়।

তবে চাকরি করলেও বরাবরই ব্যবসার প্রতি তার ঝোঁক ছিল। তাই একসময় চাকরি না করে পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ভোডাফোনের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকল্প শুরু করেন। সেই সময় শুরু করেন নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠার কাজ। নাম দেন আর্চিবো। এই মুহুর্তে আর্চিবোর মাধ্যমে জার্মানির তথ্য প্রযুক্তির বাজারে নতুন সফটওয়্যার চালুর কাজ করছেন তিনি।

চাকরির মত নিশ্চিত কাজ বাদ দিয়ে ব্যবসার মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? জানতে চাইলে জিয়াদ ইকবাল বলেন, ”ব্যবসার প্রতি এই টানটা আসলে আমার পরিবার থেকেই পাওয়া। বাংলাদেশেও আমার নিজস্ব আইটি কোম্পানি ছিলো এবং সেখানে ভোটার আইডি কার্ড এর মত প্রকল্পে আমরা কাজ করেছি। জার্মানিতে এসে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা নিয়েও প্রচুর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমার উদ্দেশ্য ছিলো চাকরি করে মূলত অভিজ্ঞতা অর্জন করা।”

গত কয়েক বছর ধরে জার্মানিতে তথ্য প্রযুক্তির বাজারে প্রচুর স্টার্টআপ কোম্পানি দেখা যাচ্ছে। তবে জিয়াদ ইকবাল এই প্রসঙ্গে একটু সতর্কতার কথা শুনালেন, ”বেশিরভাগ স্টার্টআপ কোম্পানি তিন বছরের পর আর টিকতে পারে না। তবে যারা টিকতে পারে তারা মোটামুটি দাঁড়িয়ে যেতে পারে। আমি নিজেও এই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি।” জার্মানিতে তথ্য প্রযুক্তির বাজারে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু যোগ্য প্রার্থী পাওয়াটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।  সেজন্য জিয়াদ ইকবাল চান প্রবাসী বাংলাদেশীদেরা এই বাজারে চাকরি খুঁজে পাক। তবে অনেকে প্রবাসী বাংলাদেশীজার্মানির শ্রম বাজারের নানা নিয়ম কানুন বুঝতে পারেন না।  সেজন্য তাদের জার্মান ভাষাটা জানা খুবই দরকারী বলে জানালেন জিয়াদ ইকবাল। এছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি কারিগরী প্রশিক্ষণটাও থাকতে হবে। “যেসব বাংলাদেশী ছাত্র এদেশে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খুঁজেন তাদের শুধু একটা মাস্টার্স ডিগ্রী থাকে।  শুধু এটা দিয়ে চাকরির বাজারে জায়গা করা খুবই কঠিন। এছাড়া বাংলাদেশীদের সময়জ্ঞান এবং কাজের মানও এই ক্ষেত্রে একটা সমস্যা তৈরি করে “, বলেন জিয়াদ ইকবাল।