Categories
প্রবাস সাক্ষাতকার

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরতে চলচ্চিত্র একটি দারুণ মাধ্যম”


আলব্রেশট হোফমান ©DieGrenze

আলব্রেশট হোফমান বিগত ১৯৯৪ সাল থেকে স্থানীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন। এজন্য তিনি স্থানীয় সংগঠন, সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করে থাকেন এবং তার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন বন এবং তার আশেপাশের সংগঠনগুলোর কাছে এক পরিচিত মুখ।

বিগত ২০১৯ সাল থেকে তিনি বনের নেট্জভের্ক পলিটিক আটেলিয়ের এর পরিচালনা কমিটির সদস্য, পাশাপাশি বনের ফিল্মফেয়ার প্রকল্পের সমন্বয়ক। গত বছর সংগঠনটি তার ১০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে, সেখানে অন্যান্যের মধ্যে আলব্রেশট হোফমানও উপস্থিত ছিলেন। সীমান্ত ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রেমেন শহরে জন্ম নেওয়া এই উন্নয়ন কর্মী তুলে ধরেন তাঁর চিন্তা-ভাবনা।

সীমান্ত: শুরুতে আমাদেরকে নেট্জভের্ক পলিটিক আটেলিয়ের সম্পর্কে কিছু বলুন।

আলব্রেশট হোফমান: সংগঠনটি ইতিমধ্যে তার ১০ বছর পার করেছে। এর পেছনে উদ্দেশ্য ছিলো নানাধরণের সংস্কৃতি থেকে আসা মানুষের মধ্যে আদান প্রদান বাড়ানো এবং বিভিন্ন প্রকল্পের সৃজনশীল বাস্তবায়ন। উদাহরণ হিসেবে আমাদের কালচার স্লামস প্রকল্প, যেখানে শরণার্থী কিংবা প্রবাসীরা কর্মশালাতে অংশ নেয় এবং তাদের ঘটনাগুলো গল্পের মত করে লিখে এবং পরে তা স্টেজে অভিনয় করে দেখায়। আরেকটি প্রকল্প হচ্ছে বনের ফিল্মফেয়ার, যেটা আমি ২০১৩ সালে চালু করেছি এবং সমন্বয় করে আসছি। বিগত ২০১৮ সালের শেষ দিকে পলিটিক আটেলিয়ের এই প্রকল্পের দায়িত্ব নেয়। গত বছর আমরা ১০ বছর পূর্তি উদযাপন করি এবং মোট ১৫টি স্পটে ১৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শণ করি। এসব ছবির বিষয় ছিল, অভিবাসন, শরণার্থী, দারিদ্র, বাসস্থানের অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অতি আহরণ। এর পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের মত ইতিবাচক ইস্যুও ছিল। আমি মনে করি, চলচ্চিত্র একটি দারুণ মাধ্যম যার মাধ্যমে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা যায় এবং তা নিয়ে আলোচনা করা যায়।

সীমান্ত: এই ক্ষেত্রে একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে গণমাধ্যমের ভূমিকা কেমন বলে আপনি মনে করেন?

আলব্রেশট হোফমান: গণমাধ্যমের ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মিডিয়া নিয়ে আমার উপলব্ধি হলো, যেমন দারিদ্র নিয়ে অনেক কথা বলা হয় কিন্তু আমরা খুব কমই দেখি যে এসব মানুষকে নিয়ে আসলেই কোন গবেষণা করা হয় কিংবা তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা হয়। মানুষ জানে না, যে এরা কী পরিস্থিতিরি মধ্যে বাস করে কিংবা এদের আসল শ্রমিক জীবনটা কী ধরণের। ধনী আর দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান শুধু জার্মানিতে বাড়ছে না বরং গোটা বিশ্বেই বাড়ছে। এজন্য আমাদের দরকার এই পরিস্থিতি সম্পর্কিত আরও বেশি তথ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র। এটা শুধু সামাজিক বিষয় নয় বরং পরিবেশ কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও করা দরকার।

©DieGrenze

সীমান্ত: অনেক অভিবাসী সংগঠনই এই বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে, তবে তাদের নিয়ে গণমাধ্যমে তেমন খবর হয় না। আপনার কী মন্তব্য এই বিষয়ে?

আলব্রেশট হোফমান: আমি এই বিষয়ে একমত। অনেক সংগঠনই কাজ করে যাচ্ছে তবে উদাহরণ হিসেবে যেমন বনের স্থানীয় মিডিয়াগুলোর এই ব্যাপারে তেমন আগ্রহ নেই। তারা কোন সংগঠন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে না কিংবা তাদের কাজ নিয়ে খুব কমই কোন সাক্ষাতকার কিংবা সংবাদ দেখা যায়। এটা খুবই দু”খজনক। এরপরও অনেক সংগঠন তাদের নিজস্ব পরিমণ্ডলে মানুষকে সচেতন করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সীমান্ত: অনেক অভিবাসী সংগঠন ইন্টেগ্রেশন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আপনার কাছে ইন্টেগ্রেশন বলতে কী বুঝায়?

আলব্রেশট হোফমান: এই ব্যাপারে স্পষ্ট কোন জবাব দেওয়া আমার জন্য কঠিন। তবে যেসব মানুষ অন্য দেশ থেকে এই দেশে কাজ করা কিংবা থাকার জন্য আসে তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি কিংবা পরিচয় ভুলে যাবে, এমনটা দাবি করা উচিত নয়। এজন্য আমাদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিমণ্ডলে এমন কিছু শর্তাবলী থাকা উচিত যাতে করে এসব মানুষগুলোর সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক এবং রাজনৈতিক পরিচয় সুরক্ষিত থাকে। এর জন্য প্রয়োজন সময় এবং পরষ্পরের কাছ থেকে শেখা, যেটা স্থানীয় সমাজ এবং অভিবাসী উভয়ের বেলাতেই প্রযোজ্য।