Categories
প্রবাস সাক্ষাতকার

“বনের কাছে আমাদের দাবি টেকসই ক্রয় নিশ্চিত করা”

বিগত ২০১১ সালে জার্মানির বন শহরে গঠন করা হয় উন্নয়ন মূলক সংগঠন ’’বনার নেট্জভের্ক’’ বা বনের নেটওয়ার্ক। বর্তমানে এই নেটওয়ার্কের রয়েছে ৭০টিরও বেশি সদস্য যাদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন অভিবাসী সংগঠন, এমনকি বনের নগর কর্তৃপক্ষ এবং গণশিক্ষা কেন্দ্র।

বিগত ২০১১ সালে জার্মানির বন শহরে গঠন করা হয় উন্নয়ন মূলক সংগঠন ’’বনার নেট্জভের্ক’’ বা বনের নেটওয়ার্ক। বর্তমানে এই নেটওয়ার্কের রয়েছে ৭০টিরও বেশি সদস্য যাদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন অভিবাসী সংগঠন, এমনকি বনের নগর কর্তৃপক্ষ এবং গণশিক্ষা কেন্দ্র।

গত বছর আইনে ভেল্ট এর আঞ্চলিক সঞ্চালিকা হিসেবে এই বনের নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লিসা স্ট্রোটমান। তখন থেকে সংগঠনের কর্মকাণ্ড দেখাশোনা করে আসছেন তিনি। সীমান্ত ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে লিসা তুলে ধরেন নেটওয়ার্কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং তাঁর নিজের দায়িত্ব কর্তব্য।

সীমান্ত: জনাব লিসা স্ট্রোটমান, বনের নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী হিসেবে আপনার কাজগুলো যদি শুরুতেই আমাদের একটু জানাতেন।

লিসা স্ট্রোটমান: সমন্বয়কারী হিসেবে আমার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে নেটওয়ার্কের অনুষ্ঠান পরিচালনা করা এবং একে সক্রিয় রাখা। যেমন আমি বৈঠকগুলোর আয়োজন করি এবং সদস্যদের মধ্যে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করি। এর বাইরে আরেকটি দায়িত্ব হচ্ছে নেটওয়ার্ককে অন্যদের সামনে তুলে ধরা। সেজন্য আমাদের যে ওয়েবসাইটটি আছে সেটা আমি দেখাশোনা করি। এছাড়া আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেমন বনের জাতিসংঘ ঘোষিত দিবস উদযাপনে নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিত্ব করি। আমার অবস্থা মূলত বনের কর্তৃপক্ষ এবং সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি সংযোগের সূত্রের মতো যেন বনের এই নেটওয়ার্ক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

সীমান্ত: বনের এই নেটওয়ার্কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

লিসা স্ট্রোটমান: গত বছর আমরা একটি জরিপ করেছিলাম আমাদের সদস্যদের মধ্যে। সেখান থেকে বেশিরভাগ মত দিয়েছে যে ভবিষ্যতে আমাদের নিজেদের মধ্যে পারষ্পরিক মতবিনিময় বাড়াতে হবে পাশাপাশি যৌথভাবে প্রকল্প কিংবা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে হবে। আমার মনে হয় সামনের দিনগুলোতে আমরা আরও বেশি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হবো এবং তৃণমূল পর্যায়ে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করবো। যেমন আমরা গত বছর বন নগরীর কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছি টেকসই ক্রয় নিশ্চিত করার জন্য আরও বেশি ভূমিকা রাখার জন্য। আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের নেটওয়ার্কের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো, বিশেষ করে যাদের উপস্থিতি খুব বেশি চোখে পড়ে না।

Lisa Stroetmann©LS

সীমান্ত: আপনি কীভাবে উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়লেন এবং এই কর্মকাণ্ডে কোন জিনিষটি আপনাকে বেশি প্রেরণা দেয়?

লিসা স্ট্রোটমান: স্কুলে পড়া শেষ করে আমি যখন মেক্সিকোতে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে ছিলাম তখন থেকেই আমার আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে কাজ করার আগ্রহ তৈরি হয়। তখন থেকেই আমি বিশেষ করে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছি যাতে করে এই বিষয়ে এখানকার মানুষের মধ্যে আগ্রহ এবং উদ্যোগ তৈরি হয়। আইনে ভেল্ট এর সঞ্চালিকা হিসেবে আমি যেটা করতে পারি তা হলো, সংগঠন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী সংস্থাগুলোকে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করা। এই কাজ খুবই বহুমাত্রিক এবং আমি নিজেই সরাসরি এর সাফল্য এবং পরিবর্তনগুলো দেখি। এই বিষয়টি আমাকে ভীষণ প্রেরণা জোগায়।

সীমান্ত: আপনার কাছে বহুমাত্রিকতা জিনিষটি কী, এবং বনের নেটওয়ার্কে এটার চর্চা কীভাবে আছে?

লিসা স্ট্রোটমান: আমাদের বনের নেটওয়ার্ক এ যে কোন সংগঠনই আসতে পারে যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ন্যায় বিচার এবং টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায়। আমাদের নেটওয়ার্কে ছোট-বড়, নতুন-পুরনো এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছে এমন সংগঠনও আছে। আরও আছে নগর কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক টেকসই সম্পর্কিত দপ্তর। আমরা চাই আমাদের সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও মতবিনিময় বাড়াতে যাতে করে সকলেই উপকৃত হয়। তবে আমার মনে হয় না যে বন নগরীতে কর্মরত আইনে ভেল্ট সংগঠনগুলোর সবাইকে আমরা এই নেটওয়ার্কের সাথে সম্পৃক্ত করতে পেরেছি। এজন্য আমরা ছাত্র সংগঠন কিংবা অভিবাসী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে আমাদের পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

সীমান্ত: অভিবাসীরা কীভাবে বৈষম্য এবং বর্ণবাদ মোকাবিলা করতে পারে?

লিসা স্ট্রোটমান: একজন সাদা চামড়ার মানুষ হিসেবে আমি এর উত্তর দিতে পারবো না। তবে আমি ভুক্তভোগীকে বলবো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার জন্য। এটা শুধু তাকেই সাহায্য করবে না বরং এই ঘটনাটা সকলে জানবে এবং তার ফলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে আমরা সাদা চামড়ার মানুষরা যেহেতু এই দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই আমাদের উচিত বর্ণবাদ নিয়ে নিজেদের আরও সচেতন করে তোলা যাতে এই বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাশাপাশি আমাদের পদ্ধতিগত বর্ণবাদ নিয়েও কাজ করতে হবে যাতে এটা আমাদের সমাজ থেকে দূর হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যবশত আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি।