Categories
কবিতা লেখালেখি

তোমাকে জিজ্ঞাসা, হে বৈশাখ

মীর জাবেদা ইয়াসমিন

প্রবল তান্ডবলীলায় প্রতিবছর
নিয়ে যাও যে তুমি
ধুয়ে মুঝে সব পুরাতনকে
সত্যিই কি পারো নিতে সব!
ফেলতে কি পারো সব মুছতে
যতো আবর্জনা কলুষিত বাতাস
সব কি পারো তুমি সরাতে
জরাজীর্ণ আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকা মানুষকে
পারো কি নতুন, সুন্দর হাস্যোজ্জল দিন
দিতে উপহার! পারো কি?
জিজ্ঞাসা তোমার কাছে...
অনেক অনেক দিনের জিজ্ঞাসা!!
 
তুমি কি জানো...!?
তোমাকে স্বাগতম জানাতে
ধার করার শাড়ী পরেছি আজও
মাথায় গুঁজেছি ঘাসফুল
তোমার আগমনীতে যে ফুটেছে আজ
প্রতিদিনে খাওয়া পান্তা ভাত
লবন, মরিচ দিয়ে খেয়েছি আজ
নতুন স্বাদে...
নতুন নিঃশ্বাসে নিয়েছি সুবাতাস!
তোমার আগমনী আমাকে দিয়েছে
কিছু সময়ের জন্য প্রফুল্লতা, আনন্দ, হাসি
ফুলে ফুলে গানে গানে ভরা উচ্ছলতায়
উচুঁ উচুঁ মানুষের সারিতে মিশতে!
 
তারপর দিনটির আলো নিভে যেতেই
আবারো সেই জরাজীর্ণ আস্তাকুঁড়ে
সেই ছিন্ন ভিন্ন তালি দেয়া শাড়ী
সেই পুরনো পান্তা ভাত, কাঁচা মরিচ!
তোমার আগমনে তোমার তেজি হাওয়া
মাঝে মাঝে আমাদের বাসভূমি আস্তাকুঁড়েটাকে
নড়বড়ে করে দেয় আরো!!
 
তোমার আগমনী আমাদের চোখে ঝরায় জল
ঠোঁটে ফোটায় মিথ্যে হাসি...
তুমি তবে কাদের জন্য
সুবারতা বহন করে আসো!
কাদের দিয়ে যাও রাঙিয়ে, কণ্ঠে ছড়িয়ে দাও
সুরের মূর্ছনা, আর পায়ে তুলে দাও
নুপূরের ঝংকার!
কাদের হৃদয়ে প্রবাহিত করো
সুশীতল বাতাস, ঠোঁটে ফোটাও তৃপ্তির হাসি!
জিজ্ঞাসা তোমাকে...
কাদের জন্য আসো তুমি
এই বাংলার বুকে
প্রতিবছর নতুন করে নতুন রূপে হে বৈশাখ
হে উৎফুল্ল তান্ডবরুপীনী বৈশাখ?!?