Categories
প্রবাস সাক্ষাতকার

“ইন্টেগ্রেশনের জন্য প্রবাসীদের বোঝা দরকার, জার্মানি কীভাবে চলে”

©IK

ইগনাসিও কাম্পিনো বিগত ১৯৭৪ সাল থেকে জার্মানিতে বসবাস করছেন। চিলিতে জন্ম নেওয়া এই কৃষি গবেষক অনেক বছর ধরে জার্মানির ভূমি উন্নয়ন, শিল্প, টেলিযোগাযোগ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অবদান রেখেছেন।

বিগত ২০০২ সালে জাতিসংঘ সেই দশকটিকে “টেকসই উন্নয়নমূলক শিক্ষা দশক” বলে ঘোষণা দেয়। সেসময় ড. কাম্পিনো এই দশক বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জার্মানির জাতীয় কমিটিতে স্থান পান। সেই জাতিসংঘের দশক পার হয়ে যাওয়ার পর টেকসই উন্নয়নমূলক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে তিনি আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেন “BiWiNa (বিভিনা)”। বর্তমানে তিনি এই সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সীমান্ত ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি তুলে ধরেছেন তার সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। পাশাপাশি কথা বলেছেন প্রবাসী সংগঠনের অর্থনৈতিক দক্ষতা বিষয়ে।

সীমান্ত: অন্য সংগঠন থেকে বিভিনা কোন দিক থেকে আলাদা?

ইগনাসিও কাম্পিনো: শিক্ষা খাতে ইতিমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন এবং সংগঠন রয়েছে যারা টেকসই বিষয়ক জ্ঞান বিতরণের কাজ করে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অর্থনীতি বিষয়টা বাদ পড়ে যাচ্ছিলো। সেজন্য আমাদের উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষাখাতে “টেকসই অর্থনীতি” বিষয়টাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

©IK

সীমান্ত: সংগঠন হিসেবে আপনারা কতটুকু লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছেন?

ইগনাসিও কাম্পিনো: প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত বছরগুলোতে আমরা বিভিন্ন প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে শেষ করতে পেরেছি। উদাহরণ হিসেবে অর্থনৈতিক দক্ষতাতে সহায়তার জন্য নানা বিষয় সংকলন এর প্রকল্পের কথা আনবো। এই সংকলন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৪০০ প্রশ্নের প্রশ্নমালা যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি, জাতীয় অর্থনীতি, ব্যবসা অর্থনীতি এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তি। এই বিষয় সংকলনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে যার কোন উত্তর নেই কারণ যার যার অবস্থান থেকে সেটা ভিন্ন হতে পারে। অনেক সময় প্রশ্নগুলো উত্তরের চেয়ে স্থায়ী। আমাদের হোমপেজে হাজার হাজার মানুষ সেগুলো ডাউনলোড করেছে।

এই প্রকল্পের বাইরে আমরা শিক্ষাদানমূলক খেলা নিয়ে “বিভিনা এসডিজি টু গো” প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। এই খেলায় রয়েছে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের ১৮ টি লক্ষ্য নিয়ে ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় লেখা কাঠের ব্লক। এর উদ্দেশ্যে হচ্ছে জাতিসংঘের উন্নয়ন লক্ষ্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়া। এছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি করেছি স্কুল ব্যাংক যেটা স্কুলগুলোর আর্থিক কর্মকান্ডের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। স্কুলের বাচ্চারা নিজেরাই বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডতে অংশ নিয়েছে, যেমন ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করা, ক্রয়-বিক্রয় তালিকা বানানো, পণ্য উতপাদন, বিতরণ, অভিযোগসহ নানা বিষয়।

সীমান্ত: প্রবাসী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য এই অর্থনৈতিক দক্ষতার বিষয়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ইগনাসিও কাম্পিনো: বেশিরভাগ প্রবাসী এমন দেশ থেকে আসেন যেসব দেশের অর্থনীতি এমনিতেই ধ্বসে পড়া, তারা অনেকেই একটি কার‌্যকর অর্থনীতি কখনো দেখেননি। একটি সফল ইন্টেগ্রেশনের জন্য প্রবাসীদের জন্য এটা বোঝা দরকার যে, জার্মানি কীভাবে পরিচালিত হয়। আর সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দক্ষতার বিষয়টি এসে যায়। তাদের কমপক্ষে জানা দরকার যে কীভাবে চাকরির বাজার কাজ করে, ব্যাংক পদ্ধতি, ব্যাংক একাউন্ট, ক্রয় ‍চুক্তি, ঋণ ব্যবস্থা, কর ব্যবস্থা ইত্যাদি।

সীমান্ত: এই “অর্থনৈতিক দক্ষতা” বিষয়টিকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অন্তর্গত করতে কী করা প্রয়োজন বলে আপনার মনে হয়?

ইগনাসিও কাম্পিনো: অনেক অলাভজনক প্রতিষ্ঠানই টেকসই বিষয়ক নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। স্কুলগুলোতে ইতিমধ্যে এই ইস্যুটি বেশ ভালো জায়গা করে নিয়েছে তবে প্রবাসীদের জন্য এখনও খুব কম সুযোগ রয়েছে। এই জন্য টেকসই উন্নয়ন এবং টেকসই অর্থনীতিকে ইন্টেগ্রেশন কোর্সগুলোতে আরও বেশি জায়গা দিলে ভালো হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।